ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কি (Virtual Reality) - চলুন জেনে আসা যাক।
Virtual Reality কে আমরা বলতে পারি কম্পিউটার তৈরিকৃত এমন একটি কৃত্তিম তিমাত্রিক পরিবেশ যেখানে ব্যাবহারকারী আসে পাশের পরিবেশকে বাস্তবের মতই অবলকন করে।
আমরা অনেকেই বিভিন্ন এনিমেশন মুভি বা থ্রি ডি গেমের সংস্পর্শে গেলেই নিজেকে নিয়ে সেখানে ভাবতে পছন্দ করেন এবং বাস্তবে কখনোই বন্যপ্রাণী বা মহাকাশে উড়ে বেড়ানো হয়তো সম্ভব না। কিন্তু এই ভার্চুয়াল রিয়েলিটির জন্য আপনার অনুভুতি বাস্তবের মতই হবে। প্রযুক্তিবিদরা এই প্রযুক্তির আরও উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছে যাচ্ছে ।
আজকের আলোচিত বিষয়ঃ
- ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কি?
- ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কত ধরনের হতে পারে?
- ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ব্যবহার
- আমার মতামত
Virtual Reality কি?
Virtual অর্থ অপার্থিব আর Reality হলো বাস্তবতা। Virtual Reality মানে হলো কম্পিউটার সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার দিয়ে তৈরি কৃত্রিম পরিবেশ যার কোন বাস্তবে অস্তিত্ব নেই।
➤ Read Also: Emulator কি? ইমুলেটর এর প্রয়োজনীয়তা!
ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ১৯৮০ দশকের মধ্যভাগে সর্বপ্রথম ব্যবহার হয়।তাছাড়া এর আগে টুইন মিরর হিসেবে কাজ করা হতো।একসময় Jaron lanier একে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি নামকরণ করেন ও পরে আরো অনেকের হাত ধরেই এটি বিকশিত হয়।
ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ডিভাইসসমূহঃ
- হাতের ডেটা গ্লোভ
- বডি স্যুট
- মাথায় হেড মাউন্টেড ডিসপ্লে
উপাদানসমূহঃ
- Effector: ভার্চুয়াল রিয়েলিটির সাথে সংযোগ সাধনে ইফেক্টর হিসেবে হাতের ডেটা গ্লোভ, বডি স্যুট ও মাথায় হেড মাউন্টেড ডিসপ্লে ব্যবহার করা হয়।
- Reality simulator: রিয়েলিটি সিম্যুলেটর হলো ইফেক্টরকে সংবেদনশীল তথ্য দেয়। বিভিন্ন সেন্সর গুলো রিয়েলিটি সিম্যুলেটর হিসেবে কাজ করে।
- Application: সিমুলেশন সফটওয়্যারগুলো এপ্লিকেশন হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
- Geometry: ভার্চুয়াল রিয়েলিটির বাহ্যিক বৈশিষ্ট্য নিয়ে তথ্য দিয়ে থাকে।
ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কত ধরনের হতে পারে?
ভার্চুয়াল রিয়েলিটি সাধারণত ৫ ধরনের হতে পারে। যেমনঃ
- Fully-immersive: প্রকৃতি ও পরিবেশের অকল্পনীয় জগতের অনুভূতি পেতে এই Artificial environment তৈরি করা হয়। ফলে আপনি আপনার ইচ্ছাকৃত স্বপ্ন পূরণ করতে পারবেন যেমন সমুদ্রের তলদেশে তিমি মাছের দেখা পাওয়া ও জঙ্গলে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় টার্জেনের মতো উড়ে বেড়ানো সবই পরিপূর্ণভাবে অনুভব করতে পারবেন।
- semi-immersive: Fully-immersive ও Non-immersive এর মাধ্যমে তৈরি হয়েছে semi-immersive।কম্পিউটার এর মাধ্যমে ও মাউসের সাহায্যে character এর বৈশিষ্ট্য আপনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।
- Non-immersive: সফটওয়্যারের মাধ্যমে কৃত্রিম পরিবেশ তৈরি করা হয়। আপনারা অ্যানিমেশন বা গেমস খেলার মাধ্যম হিসেবে নন-ইমার্সিভ ব্যবহার করা যেতে পারে।
- Augmented reality: আপনারা হয়তো দেখতে পাবেন কোন সিরিজে কিছু cartoon character থাকে যারা আপনাকে সেই বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা দিতে পারে ।বর্তমানে টিভিতে এর ব্যবহার বেশিই দেখা যায়। অথবা আপনি কিছু product কিনতে চাচ্ছেন কিন্তু তা আগেই সেটার ভিউ নিতে চাচ্ছেন সেই সময়ে Argumented reality এর ব্যবহার করা যেতে পারে।
- Collaborative VR: উন্নত মানের প্রযুক্ত দিয়ে এই পরিবেশ তৈরি করা হয়ে থাকে।সাধারণত কয়েকজন মিলে এই ভার্চুয়াল প্রজেক্টে আসতে পারেন। PUBG গেম এখন প্রচলিত গেমের মধ্যে একটি যা collaborative VR এর সাহায্যে চালিত হচ্ছে।
ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ব্যবহারঃ
- বিমানবাহিনীর যুদ্ধ প্রশিক্ষন,নৌবাহিনীর ডুবোজাহাজ পরিচালনা করা ও তাদের নিজে প্রস্তুত করার উপায় এই ভার্চুয়াল পরিবেশের মাধ্যমে করা হচ্ছে।
- শিক্ষকরা তাদের পাঠদান ভার্চুয়ালি শিক্ষার্থীদের সাথে শেয়ার করেন প্রজেক্টরের সাহায্যে।এতে তারা প্র্যাকটিকাল উপায়ে সব শিখতে পারছে।
- মেডিকেল শাখায় জটিল সার্জারি বা রোগ নির্নয়ে বর্তমানে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি এক বিশাল জায়গা দখল করে আছে।
- গ্রাফিক্স তৈরিতে বা বিভিন্ন গেমস সফটওয়্যারে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ব্যাপক ব্যবহার হয়। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি অবাস্তব পরিবেশে এক প্রকার ডাইমেনশন এনে দিতে পারে।
- প্রোডাকশনের গুনগত মান যাচাই-বাছাই করার জন্যও ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহার করা যেতে পারে।
- প্রকৌশল ও গবেষণার কাজে সিমুলেশনের মাধ্যমে কম্পিউটারের থ্রি ডি ইমেজ ব্যবহার করে কাজ করা হচ্ছে।
- খেলাধুলা ও বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
➤ Read Also: Cyber Security কি? সাইবার সিকিউরিটি এর প্রয়োজনিয়তা।
ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ক্ষতিকর প্রভাবঃ
ভার্চুয়াল রিয়েলিটির সাহায্যে প্রযুক্তিতে অনেক উন্নতি হয়েছে তেমনি শিশুদের উপর বাজে প্রভাব পড়ছে।
- বাচ্চারা গেমসের উপর দিনদিন আসক্ত হয়ে পড়ছে।তাদের চোখের সমস্যা দেখা দিবে ও কর্নিয়াও নষ্ট হয়ে যেতে পারে। Blue whale নামে এক ধরনের গেমস সফটওয়্যার মানুষের মাঝে ভয়ের সৃষ্টি করেছিলো।অনেক ছেলেমেয়ে এই গেমের নেশায় পড়ে জীবন দিয়েছে পর্যন্ত।
- কল্পনা জগতের প্রতি মানুষ বেশি আসক্ত হয়ে পড়ছে।
আমারমতে- ভার্চুয়াল রিয়েলিটি আপনাদের মাঝে যে উদ্বেগ তৈরি করেছে তা প্রযুক্তিতে ডিজিটাল বৈষম্য তৈরি করেছে। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি অনেক ব্যয়বহুল বিধায় এর চাহিদা অনুযায়ী ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে না।ডিজিটাল এই জগতে আরো অনেক ইনভেনশনস প্রযুক্তির চাহিদা বাড়িয়ে তুলছে।কিন্তু আপনাদের ভুলে যেলে চলবে না এটা নিতান্তই কাল্পনিক অস্তিত্ব। তাই ভার্চুয়াল রিয়েলিটির পরিমিত ব্যবহার করুন।আশা করি আপনারা ভার্চুয়াল রিয়েলিটি বিষয়ে কিছু ধারণা পেয়েছেন।আপনাদের মনে আরো কোন কোয়েশ্চন থাকলে কমেন্ট করে জানাবেন।ধন্যবাদ।