কিভাবে ওয়েব সার্ভার কাজ করে?

blog background image

দৈনন্দিন প্রয়োজনে আমরা সবাই ইন্টারনেট ব্যবহার করি। আর সব সময় প্রযুক্তির সাথে নিজেদের আপডেট রাখার জন্য আমরা বিভিন্ন ধরনের অনলাইন পত্রিকা, প্রযুক্তি ব্লগগুলোকে অনুসরণ করি। কিন্তু কখনো কি একবার ও ভেবে দেখেছি আমরা যে অনলাইন ব্লগ বা ওয়েবপেজ গুলো ভিজিট করছি, এগুলো মূলত কিভাবে কাজ করে, বা আমাদের কিভাবে সাহায্য করে?

আজকে আমরা দেখবো কিভাবে ওয়েব সার্ভার কাজ করে এবং ওয়েবপেজ গুলো কিভাবে আমাদের সাহায্য করে?

এখন আপনি যে ব্লগটি পড়ছেন, এই ব্লগটিতে আপনি কিভাবে এসেছেন? এর সহজ উত্তর হচ্ছে, আপনি আপনার মোবাইল বা কম্পিউটারে নেট চালু করেছেন, তারপর যে কোন একটি প্রোগ্রাম বা সফটওয়্যার এর সাহায্য নিয়েছেন যা ওয়েব ব্রাউজার নামে পরিচিত। যেমন Google Chrome, Mozilla Firefox, Opera, Safari. এরপর আপনি ব্রাউজার অ্যাড্রেসবারে কোন URL (Uniform Resource Locator) যেমন https://toshost.com লিখে এন্টার বাটন প্রেস করেছেন। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে আপনি ব্রাউজারে URL লিখে এন্টার বাটন প্রেস করার সাথে সাথে কিভাবে ওয়েবপেজ টি ওপেন হল?

সংক্ষিপ্ত ভাবে বলা যায়, আপনি যখন ব্রাউজারে URL লিখে এন্টার বাটন প্রেস করেন তখন আপনার ব্রাউজার, যে কম্পিউটারে এই ওয়েবপেজটি রয়েছে সেই কম্পিউটার এর সাথে যোগাযোগ করে যে ওয়েবপেজটি তার প্রয়োজন। তখন সার্ভার কম্পিউটার তার কাছে থাকা এই ওয়েবপেজটি আপনার কম্পিউটারে পাঠায় এবং ব্রাউজার তা আপনার সামনে তুলে ধরে। এইযে ক্লায়েন্ট কম্পিউটার, সার্ভার কম্পিউটার এর কাছে তথ্য চাইলো এবং সার্ভার কম্পিউটার ও তথ্য দিয়ে দিলো এর মাঝে কিছু সিস্টেম কাজ করেছে। সিস্টেম গুলো মূলত কিভাবে কাজ করে আমরা দেখবো কিন্তু তার আগে আমাদের কিছু বিষয়ে জানা প্রয়োজন।

ইন্টারনেট

ইন্টারনেট শব্দটি আমাদের কাছে খুব পরিচিত। বর্তমান দুনিয়ায় এই রকম অনেক মানুষ রয়েছেন যারা ঠিকমতো না খেয়ে না ঘুমিয়ে ইন্টারনেট নিয়েই পড়ে থাকে। আসলে ইন্টারনেট কি?

বিশ্বব্যাপী যতগুলো কম্পিউটার রয়েছে তারা নিজেদেরকে প্রথমত বিভিন্ন ধরনের স্থানীয় নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সংযুক্ত করে। স্থানীয় কম্পিউটারের এই নেটওয়ার্কগুলো পরবর্তীতে আরেকটি নেটওয়ার্কের সাথে সংযুক্ত হয় এবং সেই নেটওয়ার্কটিই হলো ইন্টারনেট। সাধারনত, বাসায় অবস্থিত একটি কম্পিউটার নিজস্ব মডেমের মাধ্যমে কোন একটি ISP (Internet Service Provider) বা ইন্টারনেট সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করে এবং সেই ISP এর মাধ্যমে সে নিজেকে ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত করে। আর অফিসের কম্পিউটার গুলো প্রথমে নিজেদের মাঝে LAN বা Local Area Network এর মাধ্যমে যোগাযোগ স্থাপন করে। পরবর্তীতে এই LAN কেই স্থানীয় কোন ISP এর সাথে সংযুক্ত করে ইন্টারনেটের সুবিধা গ্রহণ করে। আমরা সাধারণত বাসায় মডেমের মাধ্যমে যে ইন্টারনেট ব্যবহার করি তা প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ৫৬ হাজার বিট ডাটা প্রেরন করে। আর অফিসে LAN এর মাধ্যমে যে ইন্টারনেট ব্যবহার করি তা যদি উচ্চগতির হয় তাহলে প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ১৫ লক্ষ বিট ডাটা প্রেরন করে। যাই হোক, একটি পিসির সাথে সংযুক্ত থাকা LAN টি যে ISP এর সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে, সেই ISP টি আবার বড় কোন ISP এর সাথে সংযুক্ত থাকে। ISP এর ধারাবাহিকতায় কোন দেশ বা অঞ্চলের বৃহত্তম যে ISP টি পাওয়া যাবে তা সাধারনত কোন ফাইবার অপটিক ব্যাকবোনের সাথে সংযুক্ত থাকে। এই ধরনের ব্যাকবোনগুলো উচ্চতম গতির অপটিক্যাল-ফাইবার তার(যা সমুদ্র তলদেশে অবস্থিত) বা স্যাটেলাইটের মাধ্যমে একে অপরের সাথে যুক্ত। আর এভাবেই পৃথিবীর দুই প্রান্তে অবস্থিত কম্পিউটার গুলো একে অপরের সাথে ইন্টারনেট এর মাধ্যমে যোগাযোগ রক্ষা করে।

ক্লায়েন্ট এবং সার্ভার

সব মিলিয়ে ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত সবগুলো কম্পিউটারকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। একটি হলো সার্ভার কম্পিউটার এবং অপরটি হলো ক্লায়েন্ট কম্পিউটার। সার্ভার কম্পিউটার গুলো সেবাদান করে। আর ক্লায়েন্ট কম্পিউটার গুলো সেবা গ্রহন করে। কিন্তু এটাও সম্ভব যে একটি কম্পিউটার একই সাথে সেবা দিচ্ছে এবং সেবা নিচ্ছে। একটি সার্ভার কম্পিউটারে আবার বিভিন্ন ধরনের সফট্‌ওয়্যার থাকে, যা তাকে বিশেষ ধরনের কাজ দ্রুত শেষ করতে সাহায্য করে। যেমন, ই-মেইল সার্ভার একটি কম্পিউটারকে ই-মেইল আদান-প্রদানের উপযোগী করে। আপনি যখন জিমেইল (বা যেকোন ই-মেইল সার্ভারের) মাধ্যমে আপনার কোন বন্ধুকে ই-মেইল পাঠান, তখন আপনার ই-মেইলটি বিভিন্ন সার্ভার ঘুরে আপনার বন্ধুর কম্পিউটারে পোঁছায় এবং প্রতিটি সার্ভারই এই কাজে তার ই-মেইল সার্ভার সফটওয়্যারকে ব্যবহার করে।

আইপি অ্যাড্রেস (IP- Internet Protocol Address)

ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত প্রতিটি কম্পিউটারের একটি নির্দিষ্ট ও একক নাম্বার থাকে, যদিও প্রতিবার সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবার পর এই নাম্বার পরিবর্তন হয়ে যায়। আর একেই আইপি (IP) এ্যাড্রেস বা Internet Protocol address বলে। সাধারণত, সার্ভারের আইপি অ্যাড্রেস পরিবর্তন হয়না। কারন ক্রমান্বয়ে অনেকগুলি কম্পিউটার মুল সার্ভারকে সবসময়ই চালু রাখে, সেজন্য বিশেষ কোন কারন না ঘটলে সার্ভার ইন্টারনেট থেকে বিচ্ছিন্ন হয়না। কিন্তু, একটি পিসি যখন মডেমের মাধ্যমে ISP হয়ে ইন্টারনেটে সংযুক্ত হয় তখন ঐ ISP তাকে একটি আইপি(IP) এ্যাড্রেস দেয়, যা ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আগ পর্যন্ত অপরিবর্তিত থাকে। উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমে IP Address দেখার জন্য ইন্টারনেট সংযোগ থাকা অবস্থায়  Command Prompt এ গিয়ে ipconfig লিখে এন্টার প্রেস করুন, আপনি আপনার IP address দেখতে পাবেন। IP Address সম্পর্কে আরো জানতে নিচের লিংকে ভিজিট করুন,

https://goo.gl/SE2nfY

 

ডোমেইন নেইম

ডোমেইন নেইম বলতে আমরা কোনো সংগঠনের নামকে বুঝি, যে নাম ব্রাউজারের এ্যাড্রেস বারে লিখে এন্টার চাপলে আমরা সেই সংগঠনের ওয়েবপেইজটি দেখতে পাই। যেমন ‘Tos Host' একটি সংগঠন এবং https://toshost.com  হলো এর ডোমেইন নাম। উপরে আমরা আইপি এ্যাড্রেস সম্পর্কে জেনেছি, ডোমেইন নাম আসলে এই আইপি এড্রেসের পরিবর্তে ব্যবহৃত হয়। পৃথিবীতে হাজার হাজার ওয়েব সার্ভার রয়েছে, আর এই সব গুলো সার্ভার এর IP Address আমাদের মনে রাখা খুবই অস্বাভাবিক। তাই ডোমেইন নেইমের ব্যবস্থা, যা আইপি(IP) অ্যাড্রেসকে ইংরেজী ভাষায় প্রকাশ করে।

 একটি ওয়েবপেজ এর অ্যাড্রেস মূলত ৩টি জিনিস নিয়ে গঠিত।

  • নিয়ন্ত্রকের নাম (Host Name- “WWW”)
  • সংগঠনের নাম (Domain Name- “Toshost”)
  • সংগঠনের প্রকৃতি (“.com”)


হোস্ট নেইম হচ্ছে ডোমেইন নেইমের ঐচ্ছিক একটা অংশ। যেকোন কোম্পানি নিজের ইচ্ছে অনুযায়ী হোস্ট নেইম দিতে পারে। আগে হোস্ট নেইম হিসেবে WWW এর বহুল ব্যবহার থাকলেও ইদানিং অনেক কোম্পানি এটি ব্যবহার করেন না, আর করলে ও অন্য নাম ব্যবহার করেন। যেমন, https://toshost.com  আগে কোনো হোস্ট নেইম নেই। হোস্ট নেইমকে অনেক সময় তৃতীয় মাত্রার ডোমেইন নাম বা third-level domain name ও বলা হয়। সংগঠনের পরিচিতিমূলক নাম দ্বারা একটি সংগঠনের ধরন বা প্রকৃতি বোঝানো হয়। যেমন ‘.com’ দিয়ে company; ‘.org' দিয়ে ‘organization'; ‘.edu’ দিয়ে ‘education’ প্রভৃতি বোঝানো হয়। যখন সংগঠনের মুল নাম কে (‘Toshost’) তার প্রকৃতির (‘.com') সাথে যুক্ত করে পড়া হয় তখন সেই পুরো অংশটিকে (Toshost.com) সংগঠনের second-level domain name বলা হয়। সংগঠনের এই second-level domain name টিই হলো IP address এর পরিপূরক।

ডোমেইন নেইম সার্ভার (DNS)

DNS (Domain Name Servers) হলো এক ধরনের ডাটাবেজ যা প্রতিটি IP এ্যাড্রেসের বিপরীতে সংরক্ষিত ডোমেইন নেইমসমূহের তালিকা সংরক্ষণ করে। এবং এ তালিকা ইন্টারনেটের কোন একটি নির্দিষ্ট সার্ভারে সংরক্ষিত নয়, ধাপে ধাপে পৃথিবী জুড়ে বিস্তৃত। আপনি যখন আপনার ব্রাউজারের এ্যাড্রেস বারে কোন ডোমেইন নাম লিখে এন্টার প্রেস করেন তখন আপনার কাছাকাছি থাকা কোনো DNS সার্ভার আপনার এই ডোমেইন নেইমকে সংশ্লিষ্ট আইপি এ্যাড্রেসে পরিবর্তিত করে তার সাথে আপনার যোগাযোগের ব্যবস্থা করে। এই কাজে প্রতিটি নেটওয়ার্কিং অপারেটিং সিস্টেম এক ধরনের সফটওয়্যার ব্যবহার করে যাকে বলা হয় DNS Resolver, যা IP এ্যাড্রেস খুঁজে পেতে সাহায্য করে।

পোর্ট

পোর্ট শব্দের বাংলা অর্থ বন্দর, আর পোর্ট আসলেই ঐরকমই। যে স্থান দিয়ে অনেক কিছু ইনপুট হয় আবার আউটপুট হয়। কম্পিউটার এর ক্ষেত্রে পোর্ট দুইটি ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। যেমনঃ

হার্ডওয়্যার পোর্ট- কম্পিউটার এর পেছনে আমরা যে জায়গায় মাউস, কীবোর্ড, প্রিন্টার এর সংযোগ দেই ঐগুলো হার্ডওয়্যার পোর্ট।

আরেক পোর্ট প্রোগ্রামিং করার সময় তৈরি হয়। এই পোর্টগুলো IP Address এর সাথে এক ধরনের Extension এর মত থাকে, যা কিছু নির্দিষ্ট সেবা নিশ্চিত করে। যেকোন সার্ভার মেশিন তার বিভিন্ন ধরনের সেবাদানের জন্য ভিন্ন ভিন্ন পোর্ট তৈরি করে। ক্লায়েন্টরা সাধারনত IP Address এর নির্দিষ্ট একটি পোর্টে যোগাযোগ করে থাকে। যদি ও পোর্টের সংখ্যা ০-৬৫৫৩৬ পর্যন্ত হতে পারে। কিন্তু বহুল ব্যবহৃত পোর্টগুলো ছোট সংখ্যা ব্যবহার করে।

নিচে কিছু প্রয়োজনীয় পোর্টের নাম ও নম্বর দেওয়া হল।

  • SSH
  • FTP
  • Telnet 23
  • TCPMUX (TCP port service multiplexer)
  • IMAP (Internet Message Access Protocol)
  • POP3 (Post Office Protocol version 3)
  • SMTP 25 (Simple Mail Transfer Protocol)
  • WWW 80

কোন পোর্ট যদি ফায়ারওয়াল দ্বারা সংরক্ষিত না থাকে তাহলে, সার্ভার কম্পিউটার অনুমতি দিলে ঐ পোর্টের সাথে যেকোন সময় যেকোন জায়গা থেকে যোগাযোগ করা সম্ভব।

এখান থেকে বোঝা যাচ্ছে, কোন সার্ভার কম্পিউটারের কাছে যদি আপনি ওয়েব ব্রাউজার মাধ্যমে কোন ওয়েবপেজ কে খোঁজেন এবং তা পেয়ে যান, তার জন্য নিচের ধাপ গুলো কাজ করেঃ

  • Protocol (HTTP)
  • Server Name (Toshost.com)
  • File Name (contact.php)



এরপর আপনার ব্রাউজার ‘toshost.com’ কে আই.পি এ্যাড্রেসে রুপান্তরিত করার জন্য একটি DNS সার্ভারের সাথে যোগাযোগ করে। তারপর, প্রাপ্ত আই.পি এ্যাড্রেস দিয়ে ব্রাউজার সার্ভার কম্পিউটারের সাথে তার একটি যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করে। এই যোগাযোগ সাধারনত সার্ভার কম্পিউটারের ৮০ নং পোর্ট দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়। যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর আপনার ব্রাউজার সার্ভার কম্পিউটারের কাছে যদি এই পেজটি চায় https://my.toshost.com/contact.php. সার্ভারের কাছে ব্রাউজারের চাওয়ার এ প্রক্রিয়ার পারিভাষিক শব্দ হচ্ছে ‘GET Request’। আর ব্রাউজার সার্ভারের কাছ থেকে ওয়েবপেজটি পাওয়ার জন্য “Get Request” পাঠায়। সার্ভার তখন ঐ পেইজটিকে “HTML Text” আকারে ব্রাউজারের কাছে পাঠায়।
শেষ, আপনার ব্রাউজার “HTML Text” টি পড়ে এবং সেই অনুযায়ী পেইজটিকে সাজিয়ে আপনার কাছে প্রদর্শন করে।

Related Blog Post

Create, collaborate, and turn your ideas into incredible products with the definitive platform for digital design.

How to create cPanel backup from command line

12 December 2022

How to create cPanel backup from command line

This article explains how you can create cPanel backup from the command line, using your own username and password.

Read More
How to install Webuzo Panel on linux Server

12 December 2022

How to install Webuzo Panel on linux Server

Webuzo is a popular alternative to cPanel, a widely used web hosting control panel developed by cPanel, Inc.

Read More
What are NFT Domains?

02 February 2022

What are NFT Domains?

NFT domains are new web extensions that are deployed using ERC 721 and Polygon Network, except .zil which uses Zilliqa.

Read More
How to Delete a MySQL® Database

01 January 2022

How to Delete a MySQL® Database

This document describes how to manually delete a MySQL® database from a cPanel & WHM server. This is useful if, for exa

Read More
How to get Transfer Authorization Code from GoDaddy

11 November 2021

How to get Transfer Authorization Code from GoDaddy

To transfer your domain with us then must need EPP Code.

Read More

Got a question!

Contact us at