Computer Virus কি? – কম্পিউটার ভাইরাস থেকে কিভাবে মুক্তি পাবেন?

কম্পিউটার ভাইরাস (Computer Virus) এখনকার সময়ে  খুব পরিচিত একটি শব্দ। হঠাৎ কোন ফাইল ডিলিট হয়ে যাওয়া , ল্যাপটপের গতি  কমে যাওয়া বা পিসি অন করতে না পারলে বুঝতে হবে আপনার ডিভাইসে ভাইরাস প্রবেশ করেছে! কিভাবে  ভাইরাস  প্রবেশ করে অপারেটিং সিস্টেম এর কার্যক্ষমতা কমানো শুরু করে,  ভাইরাস থেকে বাচার উপায় পাশাপাশি এন্টিভাইরাস ডাউনলোড ও ব্যবহার করার উপায় এবং এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার ব্যতীত ভাইরাস দূর করা বিস্তারিতভাবে জানা জরুরি যাতে আপনারা ভাইরাস প্রতিরোধের ব্যাপারে সচেতন হতে পারেন। কথায় আছে, প্রতিরোধ প্রতিকারের চেয়ে মহা উওম। চলুন তাহলে আজকের আলোচনায় যাওয়া যাক –

Computer Virus কি?

VIRUS এর  fullform হলো (Vital Information Resources Under Siege)। Computer Virus এমন ক্ষতিকর প্রোগ্রাম যা আপনার অনিচ্ছায় পরিচালিত হয়ে কম্পিটিউটার এর ক্ষতি সাধন করে। এখন পর্যন্ত শত শত ভাইরাস তৈরি হয়েছে তাই সাইবার সিকিউরিটি আমাদের জন্য আবশ্যক হয়ে পড়েছে। কিছু হ্যাকার প্রতিনিয়ত ভাইরাস তৈরি করে যাচ্ছে। আর সেই নকশায় আমরা প্রতিনিয়ত পড়ছি । বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কম্পিউটার ভাইরাস Prank হিসেবে বানালেও পরে এটা malicious program হিসেবে ব্যাবহার কারীকে সমসায় ফেলে দেয়। 

ক্ষতিকারক এই প্রোগ্রামকে অনেকেই অনেকভাবে নামকরণ করেন তবে fred cohen সর্বপ্রথম কম্পিউটার ভাইরাস নামকরণ করেন তার একাডেমিক পেপারে।

কম্পিউটার ভাইরাস (Computer Virus) মানুষেরই সফলতার ফসল কিন্তু  একদল হ্যাকার সেটা খারাপ কাজে লাগাচ্ছে। কম্পিউটার চালানোর জন্য সফটওয়্যার প্রোগ্রাম জরুরি ঠিক তেমনি এই ছোট কম্পিউটার ভাইরাস প্রোগ্রামটি কম্পিউটারের ধ্বংসাত্মক কাজে ব্যবহার করছে। ভাইরাস কম্পিউটার প্রোগ্রামে নিজস্ব কিছু কোড লিখে দিয়ে সেই সফটওয়্যার প্রোগ্রামে ক্ষতিকারক কোড প্রবেশ করিয়ে দেয়। ফলে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে আর তথ্য হাতিয়ে নেয় ও নানা ধরনের সমস্যার সৃষ্টি করে। 

কম্পিউটার ভাইরাস কি?

কিভাবে প্রবেশ করে ভাইরাস?

  • ইন্টারনেট কানেকশন এর মাধ্যমে বিভিন্ন ভাইরাস সম্বলিত ওয়েবসাইট থেকে আপনারা অজান্তে ভাইরাস আসতে পারে এবং অযাচিত পারমিশন এর মাধ্যমে আপনার কম্পিউটার এ প্রবেশ করে। এইসব ক্ষেত্রে এডওয়ার এর কবলে ব্যাবহারকারীরা বেশি আক্রান্ত হয়।
  • ইউএসবি/সিডি এর মাধ্যমেও অন্য আরেকটি ডিভাইস এর ভাইরাস নিজের ডিভাইসে প্রবেশ করতে পারে। 
  • Email Attachment এর মাধ্যমে আপনাদের কাছে অনেক সময় আনসিকিউরড মেইলের মাধ্যমে ভাইরাস ঢুকে।
  • এছাড়া ক্র্যাক সফটওয়্যার ব্যাবহার কারীদের পিসিতে ভাইরাস আক্রান্তের সম্ভবনা সবচাইতে বেশি।

কিভাবে বুঝবেন আপনার কম্পিউটারটি ভাইরাস এ আক্রান্ত

  • Computer হঠাৎ অফ হয়ে যাওয়া।
  • Hang করবে কিছুক্ষন পরপর আর ইরর শো করবে।
  • ধীর গতিতে কম্পিউটার কাজ করলে।
  • কোন ফাইল ডিলিট হয়ে গেলে বা হঠাৎ রানিং কম্পিউটার অফ হওয়া।
  • ওয়েব পেজ বা browser অপেন করলে পপ আপ পেজ শো কর ইত্যাদি

ভাইরাসের প্রকারভেদঃ

  • Worms: এটি  সেল্ফ রেপ্লিকেটিং  যা আপনার কম্পিউটারের মধ্যে চুপ করে বসে থেকে কম্পিউটার বা ল্যাপটপের ক্ষতি করে থাকে।এই ভাইরাস শনাক্ত করা খুবই কঠিন। সাধারণত worms ভাইরাস খুঁজে পাওয়া নাগালের বাইরে। 
  • Torjens: এই ভাইরাস ক্র্যাক করা ফাইল বা গেম ইন্সটল থেকেই বেশি হয়ে থাকে। অযথা Mp3 ফাইল বা unknown লিংক থেকে ইন্সটল করলে এর শিকার হয় অনেকেই। এটি ব্যাকডোর হিসেবে ভাইরাসের গতি বাড়িয়ে বাড়িয়ে দেয়। সাধারনত হ্যাকাররা এই ভাইরাসটা বেশি ছড়িয়ে থাকে।
  • Malware :Malware  ইন্টারনেট কানেকশন থাকলে সেখান থেকে আপনি কোনকিছু ডাউনলোড বা লিংক করা কপি ইউজ করলেই ভাইরাসের আওতায় পড়ে যাবে। কম্পিউটারের প্রোগ্রামগুলো স্লো হয়ে যাবে। 

অন্যদিকে,ইন্টারনেট কানেকশন ছাড়াও আপনার কম্পিউটার ভাইরাস এর কবলে পড়তে পারে।আমরা অনেক সময় অন্য কারো থেকে ইউএসবি, পেন ড্রাইভ বা সিডি নিয়ে সেখান থেকে নিজের মনের মতো মুভি,সিনেমা, নাটক ডাউনলোড দিতে শুরু করি।

  • overwrite :ওয়ার্ডপ্রেস এপ্লিকেশনে সাধারণত আমরা ওভাররাইট ভাইরাস বেশি মাত্রায় দেখতে পাই। যে কোন তথ্য ডিলিট করে দিবে এবং আপনার কম্পিউটার সেটিংস এর কিছু ফাংশনের এপ্লিকেশন রিমুভ করে দিতে পারে।
  • Browser hijacking:আপনি কোন ব্রাউজার অপেন করলে সেখানের ফাইলের বা ডকুমেন্ট এর extension হিসেবে  কম্পিউটারে ঢুকে থাকে।
  • Adware :Adware আমাদের কম্পিউটারের ডাউনলোড কৃত ফাইলের থেকে প্রবেশ করে।
  • spyware:spyware হলো ব্রাউজারে যেয়ে আমরা যা সার্চ দেই সেই তথ্য নিজে হাতিয়ে নেয়া।spyware আমাদের ফাইল এর ইনফরমেশন চুরি করে।
  • Resident Virus:এই ভাইরাস আমাদের RAM এ লুকিয়ে থাকে।আপনারা যদি এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার করেও থাকেন তারপরও এর একটি ভার্সন মেমোরিতে স্টোর হয়ে থাকে যখন অপারেটিং সিস্টেম এর উপর লোড নেয়া শুরু হতে থাকে তাই এই ভাইরাস ডিটেক্ট করা কঠিন হয়ে পড়ে।

কিভাবে ভাইরাস প্রতিরোধ করা যায়?

সবারই একটি এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার এর কানেক্টিভিটি দরকার। তাহলে ভাইরাস বা ম্যালওয়ার সাথে কানেক্টেড অপারেশন গুলো ডিভাইসকে ক্ষতিসাধন করতে পারবে না।

  • রিভঃএই এন্টিভাইরাস বহুল ব্যবহৃত এন্টিভাইরাস। বিশ্বের ১৫০ টিরও  বেশি দেশে এই ভাইরাস ব্যবহার করে থাকে। 
  • কাসপারস্কিঃকাসপারস্কি এন্টিভাইরাস স্ক্যান করে ভাইরাসকে প্রতিরোধ করে। এটিও অন্যান্য সব এন্টিভাইরাস এর মতোই ভাইরাস রিমুভেবল। 
  • নরটনঃ এটি এন্টি ম্যালওয়ার ও ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়তে সক্ষম।নরটন আপনারা এন্টিভাইরাস হিসেবে ব্যবহার করলে ভাইরাস থেকে রেহাই পাবেন।
  • এভিজিঃএটি সাধারণত ডাউনলোড করা সফটওয়্যার গুলোকে ভাইরাসের  সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করে।

একাধিক এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার করা যায়?

আমরা অনেকেই মনে করে থাকি আমরা আমাদের কম্পিউটারের শতভাগ সুরক্ষা দিতে একাধিক এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার করা জরুরি। এতে সুফল বয়ে তো আনেই না বরং আমাদের কম্পিউটারের উইন্ডোজ ডিফেন্ডার এর যে কার্যক্ষমতা সেটা কমিয়ে দেয়।

এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার ছাড়াও ভাইরাস দূরীকরণঃ

এইখেত্রে একটি কথা না বললেই নয়, প্রতিকার থেকে প্রতিরোধ উত্তম। অপরিচিত ওয়েবসাইট থেকে কিছু ডাউনলোড না করা, পেনড্রাইভ বা অন্য স্টোরেজ থেকে ফাইল আদান প্রদান না করা। এছাড়া কিছু ডাউনলোড করার আগে ইন্টারনেট এ ফাইলটিতে ভাইরাস আছে কিনা টা চেক করে ব্যাবহার করা। এবং অবশ্যই ক্র্যাক ফাইল ব্যাবহার করা থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকা।

পরিশেষে বলতে পারি– হিডেন অবস্থায় কিছু ফাইল থাকে তাই সেই হিডেন ফাইল আগে খুজতে হবে।  My computer -এ ডান বাটনে ক্লিক করে Explorer এ ক্লিক করে windows explorer চালু করতে হবে। এবার Tools Menu তে গিয়ে Folder Option এ ক্লিক করতে হবে। এরপর সেখান থেকে হিডেন ফাইল অপশন অন করলেই হয়ে যাচ্ছে।

শুধুমাত্র কম্পিউটারে ভাইরাস (Computer Virus) প্রবেশ করে কথাটা ঠিক নয় মোবাইল ফোনেও ভাইরাস প্রবেশ করে ফোনের সিকিউরিটি নষ্ট করে দিতে পারে।ফোনের স্পীড কমায়ে ফেলতে পারে।তাই ফোনেও Space cleaner,Junk cleaner,Boost এসব সফটওয়্যার পাশাপাশি Avast antivirus  software ব্যবহার করলে ফোনে ভাইরাস ঢুকবে না।আশা করি আপনারা কম্পিউটার ভাইরাস নিয়ে কিছুটা  ধারনা পেয়েছেন।  আপনার কম্পিউটার কিভাবে সুরক্ষিত রাখবেন সে বিষয়ে উপরে বর্নিত হয়েছে। আরো নতুন কিছু জানার থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।ধন্যবাদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *