Load balancing কি – লোড ব্যালান্সিং এর আদ্যোপান্ত

Load balancing হচ্ছে এমন একটি প্রসেস, যার সাহায্যে নেটওয়ার্ক ট্র্যাফিক কে একাধিক সার্ভারে ভাগ করে দেওয়া হয়! এই প্রক্রিয়াটির মাধ্যমে যেকোনো একটি সার্ভারের জন্য যে অতিরিক্ত চাহিদার সৃষ্টি হয়, তা থেকে নিশ্চিত থাকা যায়। 

ওয়েবসাইট কিংবা অ্যাপ্লিকেশন এর পরিমাণ বা সংখ্যার বৃদ্ধির মাধ্যমে লোড ব্যালান্সিং (Load balancing), সার্ভার ব্যবহারকারীদের মাঝে এদের এভেইলেবিলিটি বাড়িয়ে দিয়েছে। তাছাড়া, ইউজারদের রিকোয়েস্ট গুলোকে এমন ভাবে নিয়ন্ত্রণ করে সার্ভার গুলোতে ডিস্ট্রিবিউট করে দেয়, যাতে রিকোয়েস্ট গুলো প্রসেস হতে সর্বাপেক্ষা কম সময় লাগে।

বর্তমান প্রযুক্তিতে হোস্টিং এর জন্য লোড ব্যালান্সার একটি মোস্ট ওয়ান্টেড প্রসেস। মূলত যে পদ্ধতিতে লোড ব্যালান্সার কাজ করে তা নিচে দেখানো হলোঃ

  • কয়েকটি সার্ভারে নেটওয়ার্ক লোড বা ইউজার রিকোয়েস্ট কে দক্ষভাবে ডিস্ট্রিবিউট করে
  • যে সার্ভার গুলো অলরেডি অনলাইন আছে, সেখানে নেট ওয়ার্ক লোড সেন্ড করার মাধ্যমে নিশ্চয়তার সৃষ্টি করে
  • চাহিদা অনুযায়ী সার্ভারের সংখ্যা যোগ বা বিয়োগ করতে পারে

এই আর্টিকেল টিতে আমরা লোড ব্যালান্সিং এর অ্যালগরিদম, এটি ব্যবহারের উপকারিতা ও জনপ্রিয় কিছু লোড ব্যালান্সিং সফটওয়ার এর সম্পর্কে আলোচনা করবো। তাই আর্টিকেলটির শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথে থাকার অনুরোধ রইলো!

Load balancing যে সকল অ্যালগরিদম মেনে চলেঃ

  • রাউন্ড রবিন মেথড
  • লিস্ট কানেকশন মেথড
  • লিস্ট রেসপন্স টাইম মেথড
  • আইপি হ্যাশ

রাউন্ড রবিন মেথড

এই মেথডে লোড ব্যালান্সার যা কাজটি করে তা হল, সিকুয়েন্স মেইনটেইন করে ইউজার রিকুয়েস্ট গুলোকে সার্ভারে পাঠায়, এক্ষেত্রে সর্বপ্রথম যে সার্ভারটি এভেইলেবল থাকে, সেখানে নেটওয়ার্ক লোড গুলোকে পাঠিয়ে দিয়ে সেই সার্ভারটিকে কিউ এর শেষ এ রেখে দেয়।

লিস্ট কানেকশন মেথড

এখানে যে সার্ভারটি লিস্ট একটিভ থাকবে, লোড ব্যালান্সার সেই সার্ভারে নেটওয়ার্ক লোড পাস করে দিবে। প্রতিটি সার্ভার এর কম্পিউটিং এর দক্ষতার উপর নির্ভর করে নির্ধারণ করা হয় কোন সার্ভারটির সাথে ইউজার এর কানেকশন সর্বাপেক্ষা কম রয়েছে।

লিস্ট রেস্পন্স টাইম মেথড

যেই সার্ভারটিতে রেসপন্স এর সময় সবথেকে কম বলে নির্ধারিত হবে, একই সাথে সেই সার্ভারটি তুলনামুলক কম একটিভ ও থাকবে , সেই সার্ভারে ইউজারের রিকোয়েস্ট টি সেন্ড করে লোড ব্যালান্সার।

আইপি হ্যাশ

ইউজারের আইপি এড্রেস এর উপর ভিত্তি করে ইউজার রিকোয়েস্ট কোন সার্ভার এ পাঠাবে তা নির্ধারণ করে লোড ব্যালান্সার।

Load balancing ব্যবহার এর উপকারিতাঃ

  • লোড ব্যালান্সিং ব্যবহার এর অন্যতম সুবিধা হলো অতিরিক্ত ইউজার রেস্পন্স এর ফলে সার্ভারে বটোল নেকিং সৃষ্টি হওয়ার আগেই এর পূর্বাভাস দেওয়ার ক্ষমতা, যা যেকোনো ওয়েবসাইট কে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে
  • নেটওয়ার্ক লোড কে একাধিক সার্ভার এ সিস্টেমেটিক্যালি ডিস্ট্রিবিউট করার মাধ্যমে ওয়েবসাইটের ফ্লেক্সিবিলিটি ও স্পীড বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে
  • ইউজার রেসপন্স কে তুলনামূলক কম সময়ে প্রসেস করে সার্ভার থেকে আবার এন্ড নোটে পাঠানোর জন্য লোড ব্যালান্সিং এর প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য

লোড ব্যালান্সার দুই প্রকার হয়। হার্ডওয়্যার লোড ব্যালান্সার ও সফটওয়্যার লোড ব্যালান্সার।

সফটওয়্যার লোড ব্যালান্সার

এটি সাধারণত তুলনামূলক কম মূল্যে ক্রয় করে কোনো কোম্পানী তাদের ওয়েবসাইটের জন্য ব্যবহার করতে পারে। সফটওয়্যার লোড ব্যালান্সার অনেক ফ্লেক্সিবেল হয়, যার ফলে যেকোনো পরিবর্তিত পরিস্থিতির সাথে এটি খাপ খাইয়ে নিতে পারে, খুবই কম ব্যয় হয় এর সিস্টেম পরিবর্তন করতে। 

তবে, প্রাইমারী ইনস্টলেশন এ কস্টিং কম হলেও ওয়েবসাইট আপগ্রেডের সাথে সাথে যখন লোড ব্যালান্সার সফটওয়্যার কেও আপগ্রেড করতে গেলে কস্টিং এর পরিমাণ ও বেড়ে যায়।

হার্ডওয়্যার লোড ব্যালান্সার

হার্ডওয়্যার লোড ব্যালান্সার এর অন্যতম সুবিধা হলো এর ভেতর লোড ব্যালান্সিং এর জন্য যে সফটওয়্যার প্রসেসিং করা থাকে, তা নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রেই কাজ করে, যার ফলে লোড ব্যালান্সিং এর প্রক্রিয়াটি দ্রুততর হয়। এছাড়া এর ইনস্টলেশনের সময় ইনিশিয়াল কস্টিং বেশি হলেও তা কিন্তু এককালীন, ওয়েবসাইট আপডেটের সাথে সাথে কস্টিং পরিমাণ বাড়বার কোনো চান্স নেই।

কিন্তু যান্ত্রিক ত্রুটি এর দেখা দিলে তখন সার্ভার ডাউন হতে পারে বা কানেকশন এর সিগন্যাল দুর্বল হয়ে যেতে পারে, যা লোড ব্যালান্সার এর পারফরম্যান্স এর মান কমিয়ে দিতে পারে।

Load Balancer কি?

image source – gbhackers.com

বিভিন্ন ধরনের লোড ব্যালান্সারঃ 

সফটওয়্যার ডিফাইনড নেটওয়ার্কিং (এসডিএন)

কন্ট্রোল প্লেন কে ডাটা প্লেন থেকে পৃথক করে রেসপন্স গুলোকে ডেলিভারী করে এই ধরনের লোড ব্যালান্সার। এসডিএন এর মাধ্যমে মাল্টিপল লোড ব্যালান্সিং নিয়ন্ত্রণ করা যায়, যার ফলে, নেটওয়ার্কিং এর নিয়মনীতি গুলোকে কেন্দ্রীয় প্রসেসর থেকে নির্ধারণ করা যায়।

ট্রান্সমিশন কন্ট্রোল প্রটোকল (টিসিপি)

 এ ধরনের লোড ব্যালান্সার আইপি অ্যাড্রেস যাতে হারিয়ে বা ব্রোকেন না হয়ে যায়, সে জন্য এরর চেকড স্ট্রিম প্যাকেট গুলো আইপি অ্যাড্রেস এ পাঠায়, যেগুলো একই সাথে নির্ভরযোগ্য স্ট্রিম প্যাকেট।

ভার্চুয়াল লোড ব্যালান্সার

এই ধরনের লোড ব্যালান্সার , লোড ব্যালান্সিং সফটওয়্যার এর ইনফ্রাস্ট্রাকচার ব্যবহার করে তাদের ফাংশন গুলো কডাক্ট করে, তবে ভার্চুয়ালি। তবে এ ধরনের লোড ব্যালান্সিং সিস্টেমে কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপনার অভাব থাকে।

সার্ভার লোড ব্যালান্সিং (এস এল বি)

এই ক্ষেত্রে নেটওয়ার্ক সার্ভিস ও কন্টেন্ট ডেলিভারী হয় লোড ব্যালান্সিং এর অ্যালগোরিদম অনুসারে।ইউজারদের স্পেসিফিক কমান্ড গুলোর উপর গুরুত্ব প্রদান করে এই লোড ব্যালান্সার কাজ করে।

ইউজার ডাটাগ্রাম প্রটোকোল

ইউডিপি লোড ব্যালান্সার সাধারণত এডপ্ট করা হয় অনলাইন ব্রডকাস্টিং ও গেমের জন্য, যেখানে স্পিড হচ্ছে সবচেয়ে গুরুতপূর্ণ টপিক! তবে এই ক্ষেত্রে রেসপন্স এর এরর চেকিং টাকে মাইনর হিসেবে রাখা হয়, কারণ আইপি এড্রেস এর হেলথ চেকিং এর মত টাইম কনজুমিং প্রসেস এই লোড ব্যালান্সার সমর্থন করে না। 

মাল্টি সাইট লোড ব্যালান্সিং

এই ধরনের লোড ব্যালান্সিং কে গ্লোবাল সার্ভার লোড ব্যালান্সার হিসেবেও জানি আমরা, এর কাজ হচ্ছে নেটওয়ার্ক লোড গুলোকে সংগ্রহ করে পৃথিবীর বিভিন্ন সাইটে যেসব সার্ভার লোকেটেড আছে, সেখানে পাঠিয়ে দেওয়া। সাধারণত কোনো দুর্ঘটনা যখন ঘটে কোনো নির্দিষ্ট একটি সার্ভারে, তখন ব্যবসায়িক ক্ষতি যাতে না হয়, তাই কন্টিনিউটি বজায় রাখতে এই লোড ব্যালান্সার ব্যবহৃত হয়।

বর্তমানে সেরা কিছু লোড ব্যালান্সার সফটওয়্যার এর নামঃ

  • এনজিনিক্স (Nginx)
  • এভিআই ভ্যানটেজ সফটওয়্যার লোড ব্যালান্সার
  • এইচএ প্রক্সি (HAProxy)
  • কেম্প লোড মাস্টার (KAMP)
  • ইনক্যাপসুলা
  • সাইট্রিক্স এডিসি

বর্তমান সময়ে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম হলো সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ একটি আলোচনার বিষয়। পৃথিবীর অসংখ্য মানুষ এখন ইন্টারনেটের আওতাধীন হওয়ায় যেকোনো ওয়েবসাইটে ইউজার ট্র্যাফিকের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে, এছাড়া অনলাইন শিক্ষাক্রম, অনলাইন সেবা, অনলাইন ব্যবসা বাণিজ্য এবং অনলাইন বিনোদন এর জন্য হাজার হাজার ট্রাফিক এসে ওয়েবসাইটগুলিতে রিকুয়েস্ট সেন্ড করছে। এই নেটওয়ার্ক গুলির সার্কুলেশন সুষ্ঠুভাবে হয়ে যাতে আবার ইউজার এর কাছেই তা রেস্পন্স হয়ে ফিরে আসে, তার জন্য লোড ব্যালান্সিং সিস্টেম হচ্ছে মাস্ট নিডেড সিস্টেম যেই কোন সার্ভার এর জন্য। কম সময়ের মধ্যে ত্রুটিহীন রেসপন্স পেতে যে কোনো ওয়েব কোম্পানির লোড ব্যালান্সার এডপ্ট করা এখন সময়ের দাবি। আশা করি এই আর্টিকেলটি লোড ব্যালান্সিং সম্পর্কিত বেসিক ধারণা দিয়ে পাঠক কে উপকৃত করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *