Routing কি? ইন্টারনেট নেটওয়ার্কিংয়ের রাউটিং এর ভূমিকা

Routing বলতে আমরা প্রেরিত তথ্য কোন নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য এক বা একাধিক নেটওয়ার্ক এর মধ্য থেকে যেকোনো একটিকে বেছে নেওয়ার পদ্ধতিকে বুঝি। একটি নির্দিষ্ট স্টেশন থেকে গাড়ি যেমন বিভিন্ন গন্তব্যের দিকে যাত্রা করে ঠিক তেমনি ভাবে ইন্টারনেটের ডাটা প্যাক গুলো একটি জটিল পথ পরিভ্রমণ এর মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট জায়গা থেকে গ্রাহকের ডিভাইসে প্রেরিত হয়। আর যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সবচেয়ে দ্রুতগতি সম্পন্ন এবং ফলপ্রসূ পদ্ধতি নির্বাচন করা হয় তাই রাউটিং।

Routing কেন গুরুত্বপূর্ণ?

আধুনিক যুগে একটি নির্দিষ্ট উৎস স্থল থেকে অন্য একটি প্রান্তে ডাটাকে রাউটিং করার জন্যই সাধারণত রাউটিং প্রয়োজন হয়ে থাকে। ব্যক্তিবিশেষ কোন একটি নির্দিষ্ট তথ্যকে অন্য প্রান্তে প্রেরণ করতে চাইলে রাউটিং একটি অত্যাবশ্যক বিষয় হয়ে পড়ে। অন্যথায় প্রেরিত ডাটা সর্বসাধারণের সম্মুখে উন্মুক্ত হয়ে যায় এবং  সেই তথ্যটি তার গোপনীয়তা হারায়।

গুরুত্বপূর্ণ Routing প্রটোকল সমূহ

নেটওয়ার্কিং এর ক্ষেত্রে একটি প্রটোকল একটি বিশেষায়িত ব্যবস্থা যার মাধ্যমে ডাটা ফরমেটিং করা হয় যাতে করে ওই নেটওয়ার্কে সংযুক্ত যে কোনো কম্পিউটার উপরোক্ত ডাটা বুঝতে পারে। রাউটিং প্রটোকল ব্যবহৃত হয় নেটওয়ার্কিং  মাধ্যম বা  পথকে শনাক্তকরণের জন্য।

নিম্নোক্ত প্রটোকল সমূহ ইন্টারনেটের মধ্য দিয়ে ডাটা প্যাক-কে তার পথ খুঁজে পেতে সাহায্য করে।

আইপি (IP)

ইন্টারনেট প্রটোকল অথবা আইপি প্রত্যেক ডাটা  প্যাকেটের উৎস স্থল এবং গন্তব্য স্থল শনাক্ত করে।

আর এই ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে রাউটার যা কিনা প্রত্যেক প্যাকেটের আইপি হেডার কে পর্যবেক্ষণ করে এবং তথ্যের গন্তব্য স্থল শনাক্ত করে।

বিজিপি (BGP) 

বিজেপি অথবা বর্ডার গেটওয়ে প্রটোকল হল ইন্টারনেটের একটি ডাক সেবা। এর কাজ হল ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রেরিত তথ্যকে সর্বোত্তম পন্থায় তার গন্তব্যে প্রেরণ করা| মূলত এই রাউটিং প্রটোকল নির্ধারণ করে কোন নেটওয়ার্ক কোন আইপি অ্যাড্রেস কে নিয়ন্ত্রণ করবে এবং কোন নেটওয়ার্ক একে অপরের সাথে সংযুক্ত থাকবে। বিজেপি হল একটি ডাইনামিক রাউটিং প্রটোকল ।

ওএসপিএফ(OSPF)

নেটওয়ার্ক রাউটার ওএসপিএফ অথবা ওপেন শর্টেস্ট পাথ ফাস্ট  এই প্রটোকলটি  ব্যবহার করে  ডাটা প্যাকেটকে দ্রুততম এবং সংক্ষিপ্ততম  মাধ্যম দিয়ে তার গন্তব্যে পৌঁছায়।

আর আই পি (RIP)

“হপ  কাউন্ট” ব্যবহার করে আর আই পি বা রাউটিং ইনফরমেশন প্রটোকল এক নেটওয়ার্ক থেকে অন্য নেটওয়ার্কে তথ্য গমনের জন্য সংক্ষিপ্ততম পথ খুঁজে বের করে। “হপ  কাউন্ট” হল  একটি প্যাকেট যে সংখ্যক রাউটার উক্ত মাধ্যমে প্রেরণ করবে । এক নেটওয়ার্ক থেকে অন্য নেটওয়ার্কে গমন কৃত প্যাকেট ‘হপ’ হিসেবে পরিচিত।

আরো রয়েছে কিছু আভ্যন্তরীণ রাউটিং প্রটোকল। যেমনঃ  ই আই জি আর পি (EIGRP) অথবা এনহান্সড ইন্টেরিয়র রাউটিং প্রটোকল। এটি সাধারণত সিসকো রাউটার এবং আইএস – আইএস ( ইন্টারমিডিয়েট সিস্টেম ইন্টারমিডিয়েট সিস্টেম)  এর সাথে ব্যবহৃত হয়।

Routing এর জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি

রাউটিং এর প্রধান বৈদ্যুতিক অনুষঙ্গ হলো রাউটার, যা কিনা এ  রাউটিং প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে । প্রশ্ন হল রাউটার কি?

রাউটার হল একটি নেটওয়ার্ক হার্ডওয়ার যার কাজ হলো সফটওয়ারের সাহায্যে ডাটা প্যাকেটকে তার গন্তব্যে  ধাবিত করা। রাউটার দুই বা ততোধিক আইপি নেটওয়ার্ক অথবা উপ নেটওয়ার্কে সংযুক্ত করে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী এই দুইয়ের মাঝে সম্ভাব্য দ্রুততম এবং সর্বোচ্চ ফলপ্রসূভাবে ডাটা প্যাকেট আদান-প্রদান করে।

Routing কিভাবে কাজ করে?

প্রত্যেক রাউটারের আলাদা অ্যাড্রেস বা ঠিকানা আছে যা আইপি অ্যাড্রেস নামে পরিচিত। এটা একটি সুনির্দিষ্ট রাউটারের জন্য একটি নির্ধারিত ঠিকানা। বিশ্বের অন্য কোন রাউটারের সাথে এই ঠিকানা কখনো মিলবে না।যেমনটি আমাদের বাসার ঠিকানা যা কিনা  বিশ্বের অন্য  কোথাও অন্য কোন বাসার ঠিকানার সাথে মিলে না। এই একটিমাত্র আইপি অ্যাড্রেস ডাটাকে অন্য কোন ডিভাইস অথবা যন্ত্রে নির্ভুলভাবে প্রেরণ করা কে সম্ভবপর করে তোলে।

রাউটিং এর প্রকারভেদ

রাউটিং সাধারনত দুই ধরনের হয়ে থাকে। যথাঃ

  • স্ট্যাটিক রাউটিং 
  • ডাইনামিক রাউটিং

স্ট্যাটিক রাউটিং

যখন একটি রাউটারে, রাউটারের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট পথ নির্ধারিত হয় তাই স্ট্যাটিক রাউটিং। সাধারণত ক্ষুদ্র নেটওয়ার্কে এ ধরনের রাউটিং ব্যবহৃত হয়| এটি তুলনামূলকভাবে অধিকতর নিরাপদ কারণ এটা সম্পূর্ণ অযান্ত্রিক উপায় একটি সুনির্দিষ্ট আইপি অ্যাড্রেস-এ তথ্য প্রেরণ করে থাকে| তথ্য প্রেরণের জন্য এটিকে অন্য কোন রাউটার রিসোর্স – এ পথ খুঁজতে হয় না কারণ তা ইতিমধ্যেই নির্ধারিত করা আছে । তবে মনে রাখা প্রয়োজন সাধারণ ব্যবহারের জন্য স্ট্যাটিক আইপি কোন ভালো বা সঠিক নির্বাচন নয়। যদি নির্দিষ্ট রাউটিং অ্যাড্রেস কোন ধরনের বিঘ্ন সৃষ্টি হয় সে ক্ষেত্রে ডাটা প্রেরণ বিঘ্নিত হয় এবং প্রেরিত ডাটা হারিয়ে যেতে পারে।  আবার যদি একই চ্যানেলের মাধ্যমে প্রচুর ডাটা প্রেরিত হয়ে থাকে সে ক্ষেত্রে ডাটা স্থানান্তর গতি তুলনামূলকভাবে মন্থর হয়ে পড়ে। 

ডাইনামিক রাউটিং

আমাদের দৈনন্দিন ব্যবহারের ক্ষেত্রে এই ধরনের রাউটিং খুবই প্রচলিত। যখন কোন একটি রাউটার বিশেষ সফটওয়্যার ব্যবহারের মাধ্যমে সর্বোচ্চ ফলপ্রসূ এবং দ্রুতগতিসম্পন্ন পথে কোন নির্দিষ্ট গন্তব্যে  ডাটা প্রেরণ করে  তাকে ডাইনামিক রাউটিং বলা হয়। যখন কোন একটি নেটওয়ার্কে অনেকগুলো কম্পিউটার সংযুক্ত থাকে যেখানে অনেকগুলো রাউটার ব্যবহৃত হয় সেখানে ডাইনামিক রাউটিং ব্যবহার একটি উপযুক্ত মাধ্যম । একটি স্বাধীন নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা হওয়ায় গণ ব্যবহারের ক্ষেত্রে এটা অধিকতর অপছন্দনীয়।  তবে এত ইতিবাচক দিক এর সাথে সাথে এর কিছু মন্দ দিকও রয়েছে|  প্রাথমিকভাবে ব্যবহারের ক্ষেত্রে কখনও কখনও একটি জটিলতার সৃষ্টি করতে পারে এবং এটি তুলনামূলকভাবে কম নিরাপদ।

ক্লাউডফ্লেয়ার কিভাবে রাউটিংকে কার্যকর এবং নিরাপদ করে?

ক্লাউডফ্লেয়ার স্মার্ট রাউটিং ব্যবহারের মাধ্যমে নেটওয়ার্কের বিশাল  জট থাকা সত্বেও দ্রুততম সময়ে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ডাটা প্যাকেট কে  বিভিন্ন গন্তব্যে প্রেরণ করে| ক্লাউডফ্লেয়ার ম্যাজিক ট্রানজিট বিজিপি ব্যবহার করে গ্রাহকের নেটওয়ার্কে কোন রকমের  জট সৃষ্টির আগেই তা নিরসন করে ।

পরিশেষে বলা চলে রাউটিং  একটি প্রযুক্তি-সংশ্লিষ্ট শব্দ যা কিনা ক্ষুদ্র অর্থে আইপি রাউটিং কে বোঝায়। ইন্টারনেট ব্যবস্থাপনায় রাউটিং একটি গুরুত্বপূর্ণ  অ্যাড্রেসিং মাধ্যম| বৃহৎ ইন্টারনেট কোম্পানিগুলো  রাউটিং ব্যবহার করে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন ডাটা সেন্টার পরিচালনা করে থাকেন। বিভিন্ন ধরনের নেটওয়ার্কে রাউটিং হয়ে থাকে যেমন সার্কিট সুইচ নেটওয়ার্ক, পাবলিক টেলিফোনের ওয়ার্ক, এবং কম্পিউটার নেটওয়ার্ক| আর রাউটিং প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয় রাউটিং টেবিলের উপর ভিত্তি করে যা কিনা বিভিন্ন নেটওয়ার্ক এর বিভিন্ন গন্তব্য পথের তথ্য ধারণ করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *