Post কি? কম্পিউটারে পোস্ট এর ভুমিকা

পোস্ট বলতে সাধারণত আমরা বুঝি প্রতিদিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে নিজের কিছু কথা লেখা বা বন্ধুদের সাথে কোন গল্প শেয়ার করা। তবে আজ যেই পোস্ট নিয়ে আমাদের আজকের এই লিখাটি সেটা কিছুটা ভিন্ন। এই POST এর পূর্ণরুপ দাড়ায় পাওয়ার অন সেলফ টেস্ট (Power On Self Test)।

অর্থাৎ কম্পিউটার দ্বারা পরিচালিত ডায়গনোসিস্ট সেট। যা কম্পিউটার বা অন্যান্য ডিজিটাল ইলেকট্রনিক ডিভাইস চালু হওয়ার পর একটি সফটওয়্যার দ্বারা সকল হার্ডওয়্যার পরীক্ষা করে থাকে। এটি যে প্রক্রিয়ায় করা হয় তাকে পাওয়ার অন সেলফ সংক্ষেপে পোস্ট বলা হয়। এই কম্পিউটার এবং পোস্টের সাথে সম্পর্ক নিয়ে আজকে আমাদের এই লেখা

পোস্ট কি

কম্পিউটার প্রায় অনেকগুলো অংশের সমন্বয়ে তৈরি যেমন – মনিটর, কিবোর্ড, মাউস, কেসিং ইত্যাদি । আবার আছে মাদারবোর্ড যার সঙ্গে আরও কিছু হার্ডওয়্যার যুক্ত করা থাকে। যেমনঃ পাওয়ার সাপ্লাই, প্রসেসর, র‍্যাম, ভিডিও কার্ড, হার্ড ডিস্ক ইত্যাদি। এখন এই সফটওয়্যার বা হার্ডওয়্যার পরীক্ষা নিরিক্ষা করার জন্য যে প্রক্রিয়া ব্যবহার করা হয়ে থাকে তাকেই পোস্ট বলে। 

অর্থাৎ মাদার বোর্ডের ভেতর যে চিপ রম থাকে সেই চিপ রমের একটা অংশ বায়োস নামে পরিচিত আর এই বায়োস এর একটা অংশ হচ্ছে পোস্ট। 

কম্পিউটারে পোস্টের কাজ 

পোস্ট (POST) একটি কম্পিউটার বা অন্যান্য ডিজিটাল ইলেকট্রনিক ডিভাইস চালু হওয়ার পর একটি সফটওয়্যার দ্বারা সকল হার্ডওয়্যার পরীক্ষা করে থাকে। মাদার্বোডে যে বায়োস থাকে তার একটা অংশ নিয়ে পোস্ট । পোস্ট সকল হার্ডওয়্যার যা মাদারবোর্ডে চালিত হয় যেমন র‍্যাম, প্রসেসর, ভিডিও কার্ড, হার্ড ডিস্ক ইত্যাদি ঠিক ভাবে কাজ করছে কিনা তা পরীক্ষা করে থাকে।

পরীক্ষার সময় যদি দেখে সব ঠিকঠাক আছে তবে সে একটি বিপ শব্দ করে। এবং তা একবারই দেয়। যদি সমস্যা থাকে তাহলে অনবরত বিপ শব্দ করতেই থাকে। আর এই কাজ করতে পোস্ট প্রথমেই কম্পিউটারের ভিডিও কার্ড চেক করে থাকে। এবং আপনি তা মনিটরে দেখতে পাবেন যে সব ঠিক আছে কিনা। পোস্ট তথ্য গুলো আপনাকে দিবে। এরপর মাউস এবং কী বোর্ড চেক করে দেখে ঠিক আছে কিনা। এভাবে একটি কম্পিউটারে চেকাপ যাকে আমরা ডায়গোনিস্ট বলতে পারি পোস্ট সেটা করে থাকে।

Image source – Wikipedia

কম্পিউটার স্টার্ট আপে পোস্টের ভূমিকা

আমাদের কম্পিউটার গুলি মাঝে মাঝে স্টার্ট করতে গেলে কিছু সমস্যা দেখা যায়। তবে পোস্ট স্টার্টের সময় কম্পিউটারের সকল ত্রুটি গুলি ভালো করে চেক করে নেয়। এতে করে আপনি আপনার কম্পিউটারের সমস্যা গুলি সম্পর্কে ধারনা পেতে পারেন এবং সে অনুযায়ী কম্পিউটারের হার্ডওয়ার বা অন্যান্য সিস্টেম এর সমস্যা গুলিকে দ্রুত সারিয়ে তুলতে পারেন। পোস্ট অন স্ক্রিনে আপনাকে আপনার কম্পিউটারের সমস্যা গুলি নিয়ে বার্তা প্রেরন করবে। এছাড়াও আরাও কিছু ভূমিকা পালন করে থাকে যেমন 

  • পোস্ট সাধারণত কোন নিদির্ষ্ট অপারেটিং সিস্টেমের উপর নির্ভর করে না। পোস্ট চালানো জন্য একটী হার্ডড্রাইভ ইনস্টল করতে হবে। সফটওয়ার ইনস্টল করতে আপনার বায়োসের দরকার হবে না।
  •  পোস্ট করার পর কম্পিউটার বুট করে চালানো যাবে। যদি উইন্ডোজ চালু হতে কিছু সমস্যায় পরে তবে তা পোস্টের জন্য নয়, মাঝে মাঝে কিছু সফটওয়ারের সমস্যার কারনেও সমস্যা দেখা দেয়। তবে পোস্টের পর পর বুট হচ্ছে কার্যকরী পদক্ষেপ।
  • একটি পাওয়ার অন সেলফ টেস্ট কীবোর্ড এবং অন্যান্য পেরিফেরিয়াল ডিভাইস এবং প্রসেসর, স্টোরেজ ডিভাইস এবং মেমরির মতো অন্যান্য হার্ডওয়্যার পরীক্ষা করে অর্থাৎ যে  উপাদানগুলির বেসিক সিস্টেম ডিভাইসগুলিতে  উপস্থিত থাকে তা পরীক্ষা করে দেয় এবং সেগুলো  সঠিকভাবে কাজ করে।
  • পরীক্ষা চালনার সময় যদি পোস্টে কোন সমস্যা দেখা দেয় তবে অন্যান্য ডিভাইস বা সফট ওয়ারের জন্য হয়ে থাকতে পারে, পোস্টের জন্য হবে না।

পোস্ট করতে যাওয়ার সময় কিছু সমস্যা

যখন পাওয়ার চালু থাকে, তখন পোষ্ট হল ডায়াগনস্টিক টেস্টিং সিস্টেম যা যে কোনও কম্পিউটারের বেসিক ইনপুট / আউটপুট সিস্টেম এর সমস্যা গুলি চিহ্নিত করে থাকে। যদি প্রয়োজনীয় হার্ডওয়্যার সনাক্ত করা হয় এবং সঠিকভাবে অপারেটিং করা অবস্থায় পাওয়া যায়, তখন কম্পিউটার বুট করা শুরু করে। যদি হার্ডওয়্যারটি সনাক্ত না করা হয় বা সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে না, তবে বায়োসে একটি ত্রুটি বার্তা পাঠানো হয় এবং বিপ করে শব্দ করে।

  • মনিটরে সমস্যা গুলি, লেড বা বিপ আকারে আসতে পারে, মাঝে মাঝে ফ্ল্যাশিং আকারেও দেখা যায়। এগুলি সব  POST কোড নামে অথবা  বিপ কোড এবং অন-স্ক্রিনের POST সমস্যা  হিসাবে উল্লেখ করা হয়।
  • যদি পোস্ট কাজ করতে ব্যার্থ হয় তা আপনি কম্পিউটারের পাওয়ার অন করার মাধ্যমে পোস্টের সমস্যা গুলি ধরতে পারবেন। তবে আপনি কীভাবে খুঁজে করবেন তা সমস্যার ধরনের উপর নির্ভর করে। ধরেন আপনার ভিডিও কার্ডে সমস্যা দেখা দিয়েছে, যার কারনে আপনি মনিটরে কিছুই দেখতে পাচ্ছে না। এরপর একটি কোথায় সমস্যা খুজতে গিয়ে একটি ভুল ম্যাসেজ দেখলেন, যা আপনাকে বিপ শব্দ শুনতে বা পোস্ট কোড পেতে সাহায্য করছে না।
  • ম্যাক ও এস এর অপারেটিং সিস্টেম এ কম্পিউটার গুলিতে পোষ্ট ত্রুটিগুলি প্রায়শই একটি সঠিক ত্রুটি বার্তার পরিবর্তে আইকন বা অন্য গ্রাফিক হিসাবে দেখা যায়। যেমন ধরেন আপনার ম্যাক স্টার্ট হওয়ার পরে একটি ভাঙা ফোল্ডার আইকনটির অর্থ কম্পিউটারটি বুট করার জন্য কোনও উপযুক্ত হার্ড ড্রাইভ খুঁজে পাবে না।

পরিশেষে, পোষ্ট হ’ল প্রযুক্তিগত শব্দ যা কেবল কম্পিউটার প্রযুক্তিবিদরা নিয়মিত ব্যবহার করেন।এটি আপনাকে কম্পিউটার বা অন্যান্য ইলেক্টনিক্স ডিভাইসে পপ আপ করতে পারে এমন সমস্যা যুক্ত  বার্তাগুলি আরও ভালভাবে বুঝতে সহায়তা করবে। যদি কোনও পোষ্ট ত্রুটির কারণে আপনার কম্পিউটারটি শুরু না হয়, তবে আপনি অন্য ডিভাইস ব্যভার করে কেন সমস্যা হচ্ছে তা খুঁজে বের করতে পারবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *